August 30, 2018

জানাযার নামাজের পর হাত তুলে দোয়া প্রসংগে " আপত্তির জবাব বিস্তারিত দলিল সহ



"জানাযার নামাজের পর হাত তুলে দোয়া প্রসংগে " আপত্তির জবাব ♥
<=================================>




→অতি দুঃখের সহিত বলতে হচ্ছে!

→ইদানিংকালে জানাযার নামাযের পর সম্মিলিতভাবে হাত তুলে দোয়া করাকে এক শ্রেণীর মানুষ বিদআত বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে আমি তাদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়ার সামান্য চেষ্টা করছি মাত্র।
→জানাজার পর মৃত ব্যক্তির কল্যাণের জন্য দো’আ করা জায়েজ এবং সুন্নাত নিন্মোক্ত দলিল সমুহ অবলোকন করলেই আমরা জানতে পারবো ইনশাআল্লাহ :-

♣দলীল নং- ০১: 

পবিত্র কোরআনে ৩০পারা,৯৪ নং সুরা ইনশিরাহ,৭-৮ নং আয়াত, মহান আল্লাহ
রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন, 
ﻓﺎﺫﺍ ﻓﺮﻏﺖ ﻓﺎﻧﺼﺐ- ﻭﺍﻟﻰ ﺭﺑﻚ ﻓﺎﺭﻏﺐ – 
আর যখন আপনি অবসর হবেন, পরিশ্রম করুন এবং আপনার প্রতিপালকের দিকে মনোনিবেশ করুন। এ আয়াতের তাফসীরে
আল্লামা ফখরুদ্দীন রাযী (রহঃ) বলেন, ﻋﻦ ﻗﺘﺎﺩﺓ
ﻭﺍﻟﻀﺤﺎﻙ ﻭﻣﻘﺎﺗﻞ ﻓﻰ ﻗﻮﻟﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ - ‏( ﻓﺎﺫﺍ ﻓﺮﻏﺖ ﻓﺎﻧﺼﺐ ‏) ﺍﻯ ﺍﺫﺍ ﻓﺮﻏﺖ
ﻣﻦ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﺍﻟﻤﻜﺘﻮﺑﺔ ﻓﺎﻧﺼﺐ ﺍﻟﻰ ﺭﺑﻚ ﻓﻰ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ ﻭ ﺍﺭﻏﺐ ﺍﻟﻴﻪ ﻓﻰ
ﺍﻟﻤﺴﺂﻟﺔ ﻳﻌﻄﻴﻚ – অর্থাৎ হযরত কাতাদাহ, দাহ’হাক 
মাকাতিল (রাঃ) আনহুম আল্লাহ পাকের এই বানী সম্পর্কে বলেন :- ﻓﺎﺫﺍ ﻓﺮﻏﺖ ﻓﺎﻧﺼﺐ এর মর্মার্থ হল
আপনি যখন ফরয সালাত শেষ করবেন, তখন নিজেকে দো’আ করার জন্য নিয়োজিত করে
নেবেন এবং প্রার্থনা করার জন্য তারই প্রতি মনোনিবেশ করবেন। তিনি আপনাকে প্রদান করবেন। বর্ণিত আয়াতের তাফসীরকারকদের মতে, নামাযের দোয়ার কথা বলা হয়েছে। 
সুতরাং জানাযা নামায যেহেতু এক প্রকার ফরয নামায যদি ও তা ফরযে কেফায়া। সেহেতু জানাযা নামাযের পর দো’য়া করা ও প্রমানিত।

♣দলীল নং- ০২:

 ﻋﻦ ﺍﻣﺎﻣﺔ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﻗﻴﻞ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ
ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻱ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ ﺍﺳﻤﻊ ؟ ﻗﺎﻝ ﺟﻮﻑ ﺍﻟﻠﻴﻞ ﺍﻻﺧﺮﻭﺩﺑﺮ ﺍﻟﺼﻠﻮﺍﺕ ﺍﻟﻤﻜﺘﻮﺑﺎﺕ –
অর্থাৎ হযরত আবু উমামাহ বাহেলী (রাঃ) হতে বর্নিত তিনি বলেন রাসূল (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে জিঙ্ঘেস করা হলো
যে, কোন মুহূর্তের দো’আ অধিক কবূল হয়ে থাকে?
তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন রাতের শেষাংশের দো’আ
(তাহাজ্জুদের সময়) এবং ফরয নামায সমূহের পরের দো’আ (দ্রুত কবূল হয়ে থাকে)”। 
যেহেতু জানাজার নামাজ ফরযে কেফায়ার তাই এ নামাযের পরে ও
দো’আ করা এ হাদীসের ভিত্তিতে জায়েয, যেভাবে পাচঁ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পরেও জায়েয।
মিশকাত শরীফ, ১৬৭৪ নং হাদিস:

♣দলীল নং- ০৩:

 ﻋﻦ ﺍﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﺳﻤﻌﺖ ﺭﺳﻮﻝ
ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ ﺍﺫﺍ ﺻﻠﻴﺘﻢ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻴﺖ ﻓﺎﺧﻠﺼﻮﺍ ﻟﻪ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ (رواه ابو داود)
– অর্থাৎ হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি রাসুল (সাল্লাল্লাহু তা’য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, তিনি
বলেছেন যখন তোমরা মৃত ব্যক্তির জানাযার নামায পড়ে ফেলবে তখন সাথে সাথেই (বিলম্ব না করেই) তার জন্য একটি খাস দো’আ কর। 
(ইবনে মাজাহ, হা/ ১৪৯৭ ও আবু দাউদ, হা/ ৩১৯৯)
এ হাদীস দ্বারা প্রমানিত হল যে, জানাযা নামাযের পর পরই মৃত ব্যক্তির জন্য খাস করে দো’আ
করতে হবে। জানাযা নামাযের পর দো’আ অস্বীকারকারীগণ এ হাদীসের উল্লেখিত দোয়াকে নামাযের মধ্যে পঠিত দো’আ অথবা মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর কবরস্থানে দো’আ করাকে বুঝাতে আপ্রান চেষ্টা চালায়। 
→তাদের জ্ঞাতার্থে বলতে চাই, আলোচ্য হাদীসে ﻓﺎﺧﻠﺼﻮﺍ
শব্দের মধ্যে ﻓﺎﺀ হরফের অর্থ কি? আল্লামা সিরাজুদ্দীন উসমান (রহঃ) এর নাহু শাস্ত্রের বিখ্যাত কিতাব হেদায়াতুন নাহুতে হরফের
অধ্যায়ে ﻓﺎﺀ হরফের অর্থ লিখা হয়েছে ﺍﻟﻔﺎﺀ ﻟﻠﺘﺮﺗﻴﺐ ﺑﻼ
ﻣﻬﻠﺔ ﻧﺤﻮ ﻗﺎﻡ ﻃﻔﻴﻞ ﻓﺒﺮﻫﺎﻥ ﻭ ﺍﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻄﻔﻴﻞ ﻣﺘﻘﺪﻡ ﻭﺑﺮﻫﺎﻥ ﻣﺘﺎﺧﺮﺍ ﺑﻼ
ﻣﻬﻠﺔ অর্থাৎ ﻓﺎﺀ হরফটি বিলম্বহীন পর্যায়ক্রমিক
অর্থে ব্যবহার হয়। যেমন ﻗﺎﻡ ﻃﻔﻴﻞ ﻭﺑﺮﻫﺎﻥ অর্থ তুফাইল
দাঁড়ালো অতঃপর বুরহান দাঁড়ালো। এ উদাহরনটিতে তুফাইলের দাঁড়ানো বুরহানের পূর্বে হবে এবং বুরহানের দাঁড়ানো বিলম্বহীন ভাবে তুফাইলের পরে হবে। অর্থাৎ বুরহানের দাঁড়ানো
তুফাইলের পূর্বে বা তার সাথে হবে না। এমনকি তুফাইলের দাঁড়ানোর অনেক পরে ও হবে না বরং তুফাইল দাঁড়ানোর পর তার সাথে সাথেই বুরহান দাঁড়াবে।
→সুতরাং উক্ত হাদীস শরীফের ইবারত হল- ﺍﺫﺍ ﺻﻠﻴﺘﻢ
ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻴﺖ ﻓﺎﺧﻠﺼﻮﺍ ﻟﻪ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ অর্থাৎ যখন তোমরা মৃত
ব্যক্তির জানাযার নামায পড়ে ফেল। অতঃপর তাঁর জন্য খাস করে দো’আ কর। আলোচ্য ইবারতে প্রথমে নামায পড়ার কথা বলা হয়েছে। তার পর
দো’আ করার জন্য বলা হয়েছে। তাই উক্ত দোয়াটি নামাযে পঠিত দো’আ হিসেবে গন্য হবেনা। নামাযের পরেই বিলম্ব না করে দো’আ করতে হবে।
এবং নামাযের পর দাফন পর্যন্ত বিলম্ব করে তার পরে পঠিত দো’আ হিসেবে ও উক্ত দো’আটি যদি
দাফনের পরবর্তী দোআ হিসেবে বুঝানো হত তাহলে হাদীস শরীফের ইবারতে ﻓﺎﺀ হরফ ব্যবহার
না করে ﺛﻢ (ছুম্মা) হরফ ব্যবহার করা হত কারণ ছুম্মা হরফের অর্থ হলো ﺍﻟﺘﺮﺗﻴﺐ ﺑﻤﻬﻠﺔ অর্থাৎ
বিলম্বের সহিত পর্যায়ক্রম। যেমন বলা হয়। ﺩﺧﻞ ﺍﻧﻮﺍﺭ
ﺛﻢ ﻣﺤﻤﻮﺩ অর্থাৎ আনওয়ার প্রবেশ করল অতঃপর
বিলম্ব করে মাহমুদ প্রবেশ করল। অনুরূপ ফা হরফের অর্থ দুরুসুল বালাগাত কিতাবের প্রনেতা আল্লামা বেগ নাসেফ, মুহাম্মদ বেগ দিয়াব,
মুস্তফা তাম্মুম ও সুলতান আফেন্দী (রাহঃ) বর্ননা করেছেন”। অনুরূপ ফা হরফের অর্থ কাফিয়া কিতাবের প্রনেতা আল্লামা জালালুদ্দীন ইবনে
হাযেব (রাহঃ) বর্ননা করেছেন”। অনুরূপ (ফা) হরফের অর্থ নুরুল আনওয়ার কিতাবের ব্যাখ্যাকার
আল্লামা মোল্লা জীউন (রাহঃ) বর্ননা
করেছেন”।
→তাই বুঝা গেল রাসুল (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জানাযা নামাযের পর পরই দোআ করার জন্য আদেশ করেছেন। আর যারা রাসূল (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর আদেশের বিপরীতে কথা বলে তাদের
ঈমান আছে কিনা সন্দেহ রয়েছে।

♣দলীল নং- ০৪: 

প্রসিদ্ধ ফকীহ ইমাম কামালুদ্দীন ইবনুল হুমাম (রাহঃ) তার ফাতাওয়ার কিতাবে
মুতার যুদ্ধের ঘটনা উল্লেখ করেন। হযরত আব্দুল জাব্বার বিন উমারাহ (রাঃ) তিনি হযরত আব্দুল্লাহ বিন আবী বাকরাহ (রাঃ) থেকে তিনি
বলেন যখন (শামদেশে) মুতানামক স্থানে (মুসলমান এবং কাফের) যুদ্ধ শুরু করল। তখন রাসুলে পাক (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (মদিনা শরীফের মসজিদে নববীর) মিম্বরে বসা ছিলেন, তখন তার এবং শ্যাম দেশের
মধ্যবর্তী স্থানের সকল আবরন দূর করে উন্মক্ত করে দেয়া হল। তিনি মুতার যুদ্ধ সরাসর


0 Comments:

Post a Comment

Social Profiles

Twitter Facebook Google Plus LinkedIn RSS Feed Email Pinterest

আপনার মন্তব্য আমাদের জানান

Name

Email *

Message *

যোগাযোগের ঠিকানা

কালাচাঁন দিঘির পূর্ব পাশে
৩ নং ওয়ার্ড,
হাটহাজারী পৌরসভা, চট্টগ্রাম।

পরিচালনায়

সভাপতি ঃ হাফেজ মুহাম্মাদ শাহেদ উদ্দিন

সাধারণ সম্পাদক ঃ মুহাম্মাদ কুতুব উদ্দিন(জিষার)

তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক ঃ মুহাম্মাদ আলী আকবর

মোবাইল নাম্বার

০১৮১৩৮৮১১৮২

০১৮৬৬৫৯৬৮৬৪

০১৮১৫৯২৪১৪৫

Copyright © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা হাটহাজারী পৌর ৩ নং ওয়ার্ড | Powered by Blogger
Design by Lizard Themes | Blogger Theme by Lasantha - PremiumBloggerTemplates.com